সাবেক রেলমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। তার বিরুদ্ধে সরকারি ও সংখ্যালঘুদের জমি দখল, টেন্ডার বাণিজ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য, সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কমিশন বাণিজ্য, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্য আমলে নিয়ে এ অনুসন্ধান শুরু হচ্ছে। শিগগির অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচার, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মসহ বিদেশেও অঢেল সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে।
জিল্লুল হাকিমের যত সম্পদ: সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে চার বছর আগে অবৈধভাবে ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ দুদকে জমা পড়ে। সম্প্রতি এ বিষয়ে আরও একটি অভিযোগ জমা হয়েছে। এর আগে রাজবাড়ীর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জিল্লুল হাকিমের অপরাধ, নির্যাতন, দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ নিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- ঢাকার উত্তরা, বনানী ও রাজবাড়ী শহরে বিলাসবহুল বাড়ি ও রাজবাড়ীর তিন উপজেলায় ৫০০ বিঘার বেশি জমি তার মালিকানা রয়েছে। তার ল্যান্ডক্রুজার, প্রাডো ভি-৮সহ ছয়টি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে ১০তলা বিলাসবহুল বাড়ি, ওই বাড়ির সামনে ৫ কাঠা প্লটের ওপর আরও একটি বাড়ি আছে তার। এ ছাড়া পাংশার স্টেশন বাজারের সামনে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর চারতলা মার্কেট, রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় ৭ কোটি টাকায় ৪২ শতাংশ জমিসহ বসুন্ধরা সিনেমা হল কিনেছেন স্ত্রী শাহিদা হাকিমের নামে। অন্যদিকে কালুখালী উপজেলার মহিমশাহী এলাকায় নিজ নামে ৩ কোটি টাকায় ৬ বিঘা জমি, বালিয়াকান্দির দেওকোল এলাকায় পরিবারের সদস্যদের নামে কিনেছেন প্রায় ১০০ বিঘা জমি।
জিল্লুল হাকিমের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর বাউন্ডারি দেয়াল ভেঙে ১৩ শতাংশ জমি ও উপজেলা সদরে সংখ্যালঘু ২০টি পরিবারের ২০ শতাংশ জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নে ১২টি সংখ্যালঘু পরিবারের ১০৭ বিঘা জমি দখল করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে লিখে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তার ছেলে আশিক মাহমুদ মিতুল পদ্মা নদীর ৫০টি স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে শত কোটি টাকা টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
(সূত্র- দৈনিক আমাদের সময়)