রাজবাড়ীর পাংশায় স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতে বৃদ্ধা আশালতা দাস হত্যা মামলায় আসামি বিশ্বজিৎ কুমার বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) উজির আলী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতে বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধা আশালতা দাসকে শ্বাসরোধ ও হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ কুমার বিশ্বাস (২৫)। পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ির কাজের লোক ঘরের বারান্দায় আশালতা দাসের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে সন্দেহজনকভাবে বিশ্বজিৎকে পুলিশ আটক করলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তার কাছ থেকে স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। তার দেখানো মতে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি।
এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের জামাতা স্বপন কুমার বিশ্বাস অজ্ঞাত আসামি করে পাংশা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী উজির আলী বলেন, ‘আশালতা দাসের দুই মেয়ে। অনেক আগেই তাদের বিয়ে হয়েছে। তাই বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন। তবে তার জায়গা-জমি দেখাশোনার জন্য একজন লোক ছিলেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ির কাজের লোক ঘরের বারান্দায় আশালতা দাসের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়।’
আইনজীবী উজির আলী আরও বলেন, ‘আশালতা দাস স্বর্ণালংকার পড়ে থাকতে পছন্দ করতেন। তার স্বর্ণালংকারের ওপর নজর পড়ে প্রতিবেশী ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের। কারণ, বিশ্বজিৎ দেনার দায়ে জর্জরিত ছিল। তার পরিকল্পনা ছিল আশালতা দাসের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেনা শোধ করবেন। ঘটনার দিন ভোরে আশালতা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় এলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা বিশ্বজিৎ গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে হাতুড়ি দিয়ে আশালতার মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে শরীর থেকে স্বর্ণালংকার খুলে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মাত্র সাত মাসের মধ্যে আদালত এ রায় দেন। এ রায়ের মধ্য দিয়ে একটি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছি।’