রাজবাড়ী জেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠের প্রকাশক প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জেলার সর্বস্তরের সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়। পরে পুলিশ সুপারের কাছেও স্মারকলিপি দেয়া হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট খান মো. জহুরুল হক। এ সময় জেলার পাঁচটি উপজেলার শতাধিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে সাংবাদিকরা বলেন, রাজবাড়ী জেলা থেকে নিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক রাজবাড়ী কণ্ঠ পত্রিকার প্রকাশক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান পত্রিকাটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দল নিরপেক্ষ একটি সংবাদপত্রের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন। শুধুমাত্র পত্রিকার প্রকাশনাই নয়, একজন নিঃস্বার্থ সমাজসেবক এবং অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে তিনি এতদ্বঞ্চলের বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ জনহিতকর কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন।
এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিন’ গত ৫ আগস্ট তিনি রাজধানী ঢাকার উত্তরায় সক্রিয় অংশগ্রহণ, নিজের অর্থে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মধ্যে খাবার পানি ও কোমল পানীয় বিতরণ এবং রাজধানী ঢাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে শাহাদতবরণকারী রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বীর ছাত্র শহীদ সাগরের কবর জিয়ারত এবং তার কবরের পাশে একটি স্মৃতিজ্ঞ ও তোরণ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় এই যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একজন সক্রিয় সমর্থক হিসেবে বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণের পরও একটি স্বার্থান্বেষী মহল ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার মানসে প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খানকে উদ্দেশ্যমূলক রাজধানী ঢাকার মিরপুর, সাভার থানার দুটি মামলায় আসামির শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে তারা আরও বলেন, এছাড়া রাজবাড়ীর কালুখালীসহ বিভিন্ন থানায় বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিয়ে কাল্পনিক ঘটনা উল্লেখে মামলা দায়েরের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা রাজবাড়ীর সাংবাদিক সমাজ সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় কোন ব্যক্তি জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে মামলাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের কোন কথা নেই। কিন্তু কোন ঘটনার সঙ্গে ন্যূনতম সম্পৃক্ততা নেই এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় আমরা হতবাক ও বিস্মিত। কারণ প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান নিজের চোখের চিকিৎসার জন্য গত ১৯ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত দেশের বাইরে অবস্থান করেন এবং ওমরা হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে গত ৬ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট’ পর্যন্ত সময়কাল দেশের বাইরে অবস্থান করেন। কিন্তু দেশের বাইরে অবস্থানকালীন সময়ের ঘটনা উল্লেখে মামলা দায়ের ও আসামির শ্রেণিভুক্ত করার ঘটনা সত্যিই অনভিপ্রেত। রাজবাড়ীর সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে উল্লেখিত মামলাগুলো থেকে অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি। নইলে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে।