রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে মদপানে জয় কুমার বিশ্বাস (১৭) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় জয়ের চাচাতো ভাই ও ভাতিজা অসুস্থ হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর মাঝিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত জয় ওই এলাকার মাছ ব্যবসায়ী বিধান কুমার বিশ্বাসের ছেলে। সে সোনাপুর মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
অসুস্থরা হলেন- মৃত জয়ের চাচাতো ভাই মাছ ব্যবসায়ী মদন কুমার বিশ্বাস (৪০) ও মদনের ছেলে নসিমন চালক বিজয় কুমার বিশ্বাস (২০)।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজয় কুমার বিশ্বাস রাজবাড়ী নিউজ২৪.কম-কে জানান, শনিবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৮ টার দিকে সে ও জয়সহ ৭ থেকে ৮ জন মদ পান করে। এছাড়া তার বাবা মদন কুমার আলাদাভাবে মদ পান করেন। রোববার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই তারা সকলেই অসুস্থতাবোধ করেন। জয় বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাত ১০ টার পর তারা রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লে হঠাৎ বমি হতে শুরু করে। রাত ১ টার দিকে জয়কে সোনাপুর বাজারের পল্লী চিকিৎসক নীরোদ বরণ বিশ্বাসের কাছে নিলে চিকিৎসক জয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
জয়ের মৃত্যু দেখে রাতেই তিনি ও তার বাবা দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে ভর্তি হন।
পল্লী চিকিৎসক নীরোদ বরণ বিশ্বাস বলেন, ‘জয় নামে একটি ছেলে অসুস্থ বলে আমাকে তার পরিবারের লোকজন ডেকে নিয়ে যায়। তারা আমাকে প্রথমে বলেছিল কয়েকদিন উপবাস থাকার কারণে গ্যাসের সমস্যা হয়েছে। আমি স্যালাইন ও ওষুধ দিয়ে চলে আসি। রাত ১ টার দিকে জয়কে পরিবারের লোকজন আমার বাড়ির সামনে ইজিবাইকে করে নিয়ে আসে। তখন তারা স্বীকার করে মদপান করেছে। আমি বিপি চেকআপ করে দেখি সে মারা গেছে।’
অসুস্থ বিজয়ের খালা চন্দনা বিশ্বাস বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আনন্দ করে ওরা মদ খেয়েছিল। তবে মদ যে মেয়দোত্তীর্ণ ছিল তা ওরা বুঝতে পারেনি। যে কারণে এই অবস্থা হয়েছে।
স্থানীয় তন্ময় কুমার বিশ্বাস বলেন, অতিরিক্ত মুনাফার আশায় মদ ব্যবসায়ীর ভেজাল মদ বিক্রি করেন। আমাদের এখানে অনেকই ভেজাল মদপান করে অসুস্থ হয়েছে। এদের মধ্যে জয় নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও দুজন অসুস্থ অবস্থায় ফরিদপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন বলেন, সোনাপুরে মদপানে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশকে না জানিয়েই পরিবারের লোকজন তার মরদেহ দাহ করেছে। এছাড়া মদপানে অসুস্থ হয়ে আরও দুজন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে আইনগতভাবে তেমন কিছু করার নেই বলেও জানান তিনি।