রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মা ও দুই মেয়েকে মারধর, কুপিয়ে জখম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) এ অভিযোগে রাজবাড়ী সদর থানায় ও সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শরিফা আক্তার (২৬)।
শরিফা খানগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের মৃত মালেক শেখের মেয়ে।
অভিযুক্তরা হলেন- হরিহরপুর গ্রামের মৃত কালু শেখের ছেলে নুরুল ইসলাম শেখ (৪০), তার ছেলে রিফাত শেখ (২১) ও মহীনি মিল লাহিড়ি বটতলা গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে নাসিম শেখ (২২)সহ অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জন।
শরিফা আক্তার বলেন, নুরুল ইসলাম শেখ আমার আপন চাচাতো ভাই। ১০ বছর আগে তার কাছ থেকে আমার বাবা আমাদের বাড়ি সংলগ্ন ৫ শতাংশ ২০ লিংক জমি কেনেন। জমি কেনার ছয় মাসের মাথায় আমার বাবা মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই নুরুল ইসলাম আমাদের কাছ থেকে ওই জমি ফেরৎ নেওয়ার পাঁয়তারা করছিল ও আমাদের চাপ দিচ্ছিল। আমরা জমি ফেরৎ দিতে অস্বীকার করায় সে বিভিন্ন সময় আমাদের হুমকি-ধামকি দিত। দুই মাস আগে আমরা বাড়ি না থাকায় নুরুল ইসলাম আমার বাবার কেনা ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে। আমরা খবর পেয়ে বাড়িতে এসে বাড়ি নির্মাণে বাধা দিলে সে আমাদের খুন জখমের হুমকি দিয়ে চুপ থাকতে বলে। ওই ঘটনায় আমার মা বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি বলেন, গত ৬ নভেম্বর সকাল ৯ টার দিকে আমি, আমার মা হাসিনা বেগম ও ছোটবোন আরিফা আক্তার আমাদের বাড়ির সামনে দুলাল কাজীর জমিতে আমাদের ধানের কাজ করছিলাম। এসময় নুরুল ইসলাম, তার ছেলে রিফাত ও ভাগিনা নাসিম অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জন লোককে সঙ্গে নিয়ে এসে আমাদের উদ্দেশ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাদের হাতে বাঁশের লাঠি, কাচি, ছ্যানদা ছিল। আমার ছোটবোন আরিফা তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা আরিফাকে ও আমাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথিসহ বাঁশের লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আরিফার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে তল পেটে কয়েকটি লাথি মেরে জখম করে ও গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। আমার মা আমাকে ও আমার ছোট বোন আরিফাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথিসহ বাঁশের লাঠি, দিয়ে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। এসময় নুরুল ইসলাম তার হাতে থাকা কাচি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার মায়ের মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করলে আমার মা ওই আঘাতটি তার হাত দিয়ে প্রতিহত করার সময় আমার মায়ের বাম হাতের তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলির মাঝ বরাবর লেগে কেটে গুরুত্বর জখম হয়। দ্রুত আমার মাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিলে তার হাতে ৯ টি সেলাই লাগে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন শরিফা আক্তার।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, হরিহরপুরে মা ও দুই মেয়েকে মারপিটের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।