দেশের সকল সমস্যার সমাধানের জন্য জনগণের প্রতিনিধির সরকার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজবাড়ী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে খুনি হাসিনা যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, সেই ফ্যাসিবাদে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের কোন অংশগ্রহণ ছিল না। সুতরাং জুলাই-আগস্টের যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে এবং ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে খুনি হাসিনা যে দেশ থেকে পালিয়েছে সেটির অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল, সাড়ে ১৫ বছর জনগণ তাদের মতামত দিতে পারেনি। জনগণ যদি মতামত দিতে পারতো তাহলে খুনি হাসিনা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে পারতো না। শেখ হাসিনা যদি জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার প্রতিষ্ঠা করতো তাহলে জুলাই-আগস্টে নির্বিচারে গণহত্যা হতো না। সুতরাং সকল সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের একটি জনগণের প্রতিনিধির সরকার প্রয়োজন। জনগণের প্রতিনিধির সরকারই পারবে দেশের সকল সমস্যার সমাধান করতে।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ফসল হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সরকারকে সহযোগিতা করার কথা বলেছেন। আমাদের দল থেকে বলা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার শুরু করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
নাছির উদ্দীন বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, সংস্কার ততদিন চলতে থাকবে। আগামী পাঁচ বছরে সংস্কার করে সবকিছু সংস্কার করে ফেলবেন; এই রোডম্যাপ করে সংস্কার সম্ভব নয়। পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রেই এটি সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা মনে করছি সংস্কার প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিয়ে একটি টাইম ফ্রেম বেঁধে দেয়া উচিত যে, আপনি কতদিনের মধ্যে সংস্কার করতে চান। এছাড়া কতদিনের মধ্যে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন সে বিষয়েও একটি পলিসি থাকা উচিত। আপনি যদি পলিসির বাইরে শুধুমাত্র বলেন যে 'আমরা সংস্কার করবো সংস্কার করবো' তাহলে এটি জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছাত্রলীগ জোর করে শিক্ষার্থীদের মিছিলে নিত। তাদের মতামত জোর করে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিত। ছাত্রদল চায় শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত ছাত্রদলের ওপর চাপিয়ে দিক। ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে রাজনীতি করবে। জোর করে মিছিলে নেয়াসহ ইভটিজিংয়ের মতো ছাত্র রাজনীতি বাংলাদেশ থেকে চিরতরে শেষ হয়েছে। এ রাজনীতি আর বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না।
তিনি বলেন, দেশে গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। টাকার বিনিময়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সকল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস চিরতরে বন্ধ করা হবে। খুনি হাসিনা দেশকে ধ্বংস করে পালিয়ে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে ঢেলে সাজাতে চাই।
নাছির উদ্দীন বলেন, একুশ শতক মেধাভিত্তিক একটি ছাত্র রাজনীতি বিনির্মাণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় বদ্ধ পরিকর এবং একুশ শতক মেধাভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বিনির্মাণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অংশীদার হতে চায়। সেজন্য আপনারা দেখেছেন গত সাড়ে ৩ মাসে বাংলাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে দখলদারিত্বের গতানুগতিক রাজনীতি চিরতরে বন্ধ হয়েছে। জোর করে মিছিলে নেয়া ও গেস্টরুম কালচারের মতো ভয়াবহ রাজনীতি বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি থেকে একদম চিরতরে বিলুপ্ত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের বাইরে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদল কখনও রাজনীতি করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।
এ সময় শিক্ষার্থীরাও প্রাণ খুলে তাদের অতীত ও বর্তমান রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাত্রদলের নেতাদের কাছে তুলে ধরেন।
নাছির উদ্দীনের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সহ-সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাছিম বিল্লাহ অপু ও রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমানসহ ছাত্রদলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান সম্পাদক : এম.এ. খালেদ পাভেল, নির্বাহী সম্পাদক : এম.এ. তারেক,বার্তা সম্পাদক : আশিকুর রহমান, ই-মেইল: rajbarinews24@gmail.com, মোবাইল: ০১৭২১-০৮৯৮২৫, ০১৭১৩-২৩০২৬৭